তবে তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া তথ্যের বরাতে পুলিশ বলছে, ছিনতাইয়ের ঘটনাকে কেন্দ্র
করে এ ঘটনা ঘটেছে। সেখান থেকে তিনজনকে আটক এবং তাদের একজনের কাছ থেকে একটি স্বর্ণালংকার
উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান পুলিশের লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার জসীম উদ্দিন।
ছুরিকাঘাতে আহতরা হলেন দীপ্ত দে (২৬), ঝন্টু ধর (৫০), খোকন ধর (৪০), সাগর
ঘোষ (২৬) ও মো. রমিজ উদ্দিন (৩০)। তাদের স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড)
হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে তারা সবাই আশঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছেন কোতোয়ালি থানার
এসআই মো. লিটন।
হামলার এ ঘটনায় আটক তিনজন হলো গাইবান্ধার আকাশ (২৩), পটুয়াখালীর মো. হৃদয়
(২৩) ও নোয়াখালীর মো. জীবন (১৯)। আটকের পর তাদের কোতোয়ালি থানা হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ
করা হয়।
তাঁতীবাজার মোড়ে মূল সড়কের পাশেই পূজামণ্ডপ। পূজা কমিটির সদস্যরা জানান,
এক যুবক পেট্রোলবোমা ছুড়ে মারে। এতে অল্প একটু আগুন জ¦ললেও বিস্ফোরিত হয়নি। এ সময় লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে
পড়ে। সবাই এদিক-সেদিক ছোটাছুটি শুরু করেন।
খবর পেয়ে সেখানে যান ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) অতিরিক্ত
কমিশনার রেজাউল করিম মল্লিক। পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘ছিনতাইয়ের ঘটনাকে কেন্দ্র
করে এ ঘটনা ঘটেছে। তিনজনকে আটক করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে বিস্তারিত জানার চেষ্টা
চলছে।’
তবে তাঁতীবাজার পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিজয় শাহ গণমাধ্যমকে
বলেন, ‘পেট্রোলবোমা হামলা ও ছিনতাইয়ের দুটি পৃথক ঘটনা ঘটেছে। পূজামণ্ডপে নাশকতার জন্য
পেট্রোলবোমা হামলা করা হয়।’
পূজামণ্ডপটির নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি পূজা উদযাপন
কমিটির স্বেচ্ছাসেবকরা রয়েছেন। তাদের একজন জয় শাহ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘হামলাকারীরা পেট্রোলবোমা
মেরে পালানোর সময় কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবক হামলাকারীদের ধরে ফেলেন। তখন হামলাকারীরা তাদের
ছুরিকাঘাত করে পালানোর চেষ্টা করে। এতে চার স্বেচ্ছাসেবক ও এক দর্শনার্থী আহত হন।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে লালবাগ বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ জসিম
উদ্দিন গতকাল রাতে বলেন, ‘তিনজনকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। প্রকৃত ঘটনা কী, তা জানতে
ঘটনাস্থলের আশপাশের ফুটেজ নিয়ে পর্যালোচনা চলছে। তবে এখনো আমরা স্পষ্ট নই এটি ছিনতাই,
নাকি অন্য কোনো ঘটনা।’
এদিকে তাঁতীবাজার পূজামণ্ডপের ঘটনায় আহতদের দেখতে গতকাল রাতে মিটফোর্ড
হাসপাতালে ছুটে যান অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। সেখানে
তিনি বলেন, ‘আহতদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা দেওয়া হবে ও চিকিৎসার সব খরচ বহন করা হবে। পাশাপাশি
দোষীদের দ্রুততম সময়ে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হবে।’
তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘দুর্বৃত্তরা নাশকতা করতে চেষ্টা
করছে, কিন্তু আমরা সেই সুযোগ তাদের দেব না। দুষ্কৃতকারী যেই হোক, তাদের দ্রুততম সময়ে
গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।’ এরপর তিনি তাঁতীবাজার পূজামণ্ডপ
পরিদর্শন করেন।