সাবেক খাদ্যমন্ত্রী ও আইন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম ও সাবেক গৃহায়ণ গণপূর্তমন্ত্রী
র আ ম ওবায়দুল মোক্তাদিরের ভাগিনা সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আহমেদ জোবায়েরকে এমডি ও অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলামের আপন ভাই চলচ্চিত্র পরিচালক মোরশেদুল ইসলামকে ডিরেক্টর করে যাত্রা শুরু করে সময় টেলিভিশন। অল্প সময়ে টেলিভিশনটি দর্শক মনে জায়গা করে নেয়। আহমেদ জোবায়ের একই সঙ্গে এমডি ও পরিচালক দুইটি পদ হোল্ড করতেন। আওয়ামী পরিবারের এই টিভি দলীয় রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করতে গিয়ে গণশত্রুতে পরিনত হয়।
সময় টিভিকে মোরশেদুল ইসলাম ও কামরুল ইসলাম আওয়ামী লীগের দলীয় প্রচারযন্ত্রে পরিনত করে। যা বাস্তবায়ন করেছে তাদের ভাগিনা সাংবাদিক আহমেদ জোবায়ের। মোরশেদুল ইসলাম ও কামরুল ইসলামের মধ্যস্থতায় স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সমস্ত এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেছে সময় টিভির সাবেক এমডি আহমেদ জোবায়ের। খুনি হাসিনার সকল অপকর্মকে বৈধতা দিতে গনমাধ্যমকে ব্যবহার করেছে তারা। বিরোধীমত দমনে মিথ্যা বানোয়াট নিউজ করে জাতিকে বিভ্রান্ত করা, মেগা প্রকল্পের লুটপাটের নিউজ গোপন রাখা, ব্যাংক ডাকাতিকে বৈধতা দিতে প্রোপাগাণ্ডার নিউজ প্রচার, জাতীয় নেতাদের চরিত্র হননের জন্য মিথ্যা ফোন কল ফাঁসের নাটক প্রচার করে আওয়ামী এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেছে সময় টিভি। আওয়ামী লীগের ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করতে যত ধরনের এজেন্ডা দরকার সবই বাস্তবায়ন করেছে তারা। বিনিময়ে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়মিত পেতো পরিবারটি।
শুধু তাই নয় সময় টিভি ছিলো সিআরআইয়ের ক্যান্টনমেন্ট। সময় টিভি থেকেই বানানো হতো তাদের মিথ্যা প্রোপাগাণ্ডার সকল নিউজ। সময় টিভির নিউজরুম ব্যবহার করে তৈরি হতো সি আর আইয়ের ভিডিও কন্টেন্ট। সময় টিভির কোনো ফরমেটে ইংলিশ কন্টেন্ট না থাকলেও এখান থেকে তা বানানো হতো শুধুমাত্র বিশ্বব্যাপী গুজবকে ছড়িয়ে দিতে। সময় টিভিতে দেশবিরোধী প্রচারনার সকল স্ক্রিপ্ট ও কন্টেন্ট সাপ্লাই দিতো সি আর আইয়ের গবেষণা সেলের প্রতিনিধি প্রতীক ও তন্ময়। তারা নিয়মিত অফিস করতো সময় টিভিতে। প্রতীক ও তন্ময় নিউজরুমে বসেই নির্দেশ দিতেন নিউজ করতে, দিতেন প্রোপাগাণ্ডার আইডিয়া। এসব কাজ বাস্তবায়ন করতেন সিআরআই রিক্রুট করা কর্মী বর্তমানে সময় টিভির ডিজিটাল হেড কামাল শাহরিয়ার, চীফ আউটপুট এডিটর ওমর ফারুক, চীফ ইনপুট এডিটর লোপা আহমেদ ও চীফ রিপোর্টার খান মুহাম্মদ রুমেল। সিআরআইয়ের পরিবেশনায় গণবিরোধী রিপোর্ট প্রচারণা করে আওয়ামী লীগের মুখপাত্র হয়ে ওঠে সময় টেলিভিশন। এজন্য ফ্যাসিস্ট হাসিনার উপহার স্বরূপ কামরুল ইসলাম দুইবার মন্ত্রী, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য।২০২৪ এর রাতের ভোটের নির্বাচনে আহমেদ জোবায়েরের খালু ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিতর্কিত এমপি র আ ম ওবায়দুল মোক্তাদির চৌধুরী মন্ত্রীত্ব লাভ করেন। আর আহমেদ জোবায়ের ও মোরশেদুল ইসলাম হাতিয়ে নেন হাজার কোটি টাকা। আর পিএম বিটের রিপোর্টার দেবাশিষ রায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নাম ব্যবহার করে বউকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়্যালয়ে চাকুরি দেয়াসহ আওয়ামী দোসর বিরোধীদের নাম সংস্থা থেকে ভয়ভীতি দেখাতো।
বিশ্ব বরেণ্য অর্থনীতিবীদ ও নোবেল জয়ী ড. মোহাম্মদ ইউনুসকে নিয়ে যত ধরণের মিথ্যা সংবাদ প্রচার করে সময় টিভি। সাংবাদিকতার নীতি নৈতিকতা বর্জন করে ড. ইউনুসকে নিয়ে মানহানিকর সংবাদ প্রচার করতে থাকে গণমাধ্যমটি। ডিজিএফআই ও গণভবন থেকে পাঠানো মিথ্যা তথ্যের উপর ভিত্তি করে চলতে থাকে ড. ইউনুসের চরিত্র হরণ। “শ্রমিক ঠাকালেন ইউনুস, নারীদের সঙ্গেও প্রতারণা করেছেন ড. ইউনূস কথিত দানের টাকায় ব্যক্তিগত যাবতীয় খরচ করতেন ড. ইউনূস, শ্রমিকদের টাকা মারলেন ইউনুস ” এমন সব জঘন্য ও মানহানিকর শিরোনামে অন্তত একশটি সংবাদ প্রচার করেছে ফ্যাসিস্টরা।
শুধু তাই নয়, সাবেক শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও তার পারিকারকে নিয়ে সর্বোচ্চ জঘন্য সংবাদ প্রচার করেছে সময় টেলিভিশন। ”পাকিস্তানের চর মেজর জিয়া, জিয়ার কবরে লাশ নাই, জিয়ার কূলাঙ্গার সন্তান তারেক, ইহুদীর জন্ম বিএনপি, জিয়ার সামরিক শাসনের অন্ধকার অধ্যায়, দুর্নীতির বরপূত্র তারেক, অসুস্থতার ভান করছেন খালেদা ” এমন নানা বিতর্কিত প্রপাগান্ডা ছড়িয়ে চরিত্র হনন করা হয় জিয়া পরিারের।
সবশেষ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে দমাতে সময় টিভিকে খুবই জঘন্যভাবে ব্যবহার করে স্বৈরাচারের দোসর পরিবারটি। ছাত্রদের আন্দোলনকে সন্ত্রাস, দুর্বৃত্তদের আন্দোলন আখ্যা দিয়ে হত্যাকাণ্ডকে বৈধতা দিতে সিআরআইয়ের লেখা স্ক্রিপ্ট প্রচার করতে থাকে তারা। সময় টিভির সাংবাদিক আন্দোলন চলাকালে যাত্রাবাড়ীতে ছাত্রদের উপর গুলি চালাতে পুলিশ নির্দেশ দিতে থাকে। সেই ভিডিও ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। মিথ্যা নিউজ প্রচার ও গণহত্যাকে উস্কে দিয়ে জনরোষের শিকার হয় তারা। শাহবাগে ছাত্রজনতার হামলায় সময় টিভির সাংবাদিক আহত হলে, তৎকালীন এমডি তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের নামে একটি মিথ্যা মামলাও দায়ের করে।
আন্দোলন চালাকলীন সিআরআই, ডিজিএফআই এর পাঠানো মিথ্যা তথ্যে নিউজের মাধ্যমে গলবিরোধী অবস্থান নেয় ফ্যাসিবাদের দোসররা। “জনভোগান্তির আন্দোলন, আন্দোলনে অস্ত্র হাতে শিক্ষার্থীরা, কোটা আন্দোলনে রোগীদের ভোগান্তি, কোটা আন্দোলনের ব্যানারে সংগঠিত হচ্ছে জঙ্গীরা, শিক্ষার্থীদের হাতে অস্ত্র দিচ্ছে কারা ” এমন সবশিরোনামে সংবাদ প্রচার করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ বলে ন্যারেটিভ তৈরির চেস্টা করে।
৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ অভ্যুত্থানে খুনি হাসিনা পালিয়ে গেলে গণমানুষের রোষানলে পড়ে সময় টিভি। উত্তেজিত জনতা টিভি চ্যানেলে হামলা করে সংস্কারের দাবি তোলে। তখন সারাদেশে চলমান সংস্কারের আলোকে সময় টিভিও ফ্যাসিবাদ মুক্ত করার ঘোষনা দেয় কর্তৃপক্ষ। সেসময় দাবির মুখে তৎকালীন চীফ রিপোর্টার খান মুহাম্মদ রুমেল ও চীফ আউটপুট এডিটর লোপা আহমেদ ও হেড অব নিউজ মুজতবা দানিশকে সরিয়ে দেয়া হয়। এমডি পদ থেকে আহমেদ জোবায়েরকে সরালেও রেখে দেয়া হয় ডিরেক্টর পদে। অথচ সেই সময়ের অন্য আরেকজন ডিরেক্টর মোরশেদুল ইসলামকে বর্তমানে দেয়া হয়েছে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব৷ বহাল তবিয়তে আছেন চীফ ইনপুট এডিটর ওমর ফারুক, প্রোমোশন পেয়ে কামাল শাহরিয়ার হয়েছেন ডিজিটাল হেড, ডিবি হারুনের সকল অপকর্মের সহকারী বুলবুল রেজাও আছেন বহাল তবিয়তে৷ নতুন করে সবাই দায়িত্ব পেয়ে আবারও আওয়ামী পুনর্বাসনের এজেন্ডা নিয়ে মাঠে নেমেছেন তারা। সময় টিভিতে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে পতিত স্বৈরাচারের দোসরদের। ইনপুট হেড করা হয়েছে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের প্রকাশ্য বিরোধীতাকারী আরিফুল সাজ্জাদ। যাকে এই অপরাধে ৫ আগস্টের পর চাকরীচু্যত করেছে নিফজ টোয়ৈন্টফোর। এমনকী বিভিন্ন গণমাধ্যম থেকে আরো চাকরিচ্যুতদের আবারও আশ্রয় দিচ্ছে সময় টিভি। ফলে খুনি হাসিনার প্রেতাত্মাদের সময় টিভিতে বহাল রেখে দেশ গঠন সম্ভব নয়। নতুন করে বিপ্লব বেহাতের চক্রান্ত করছে তারা।
১. মোরশেদুল ইসলাম:
সময় টিভির সেই সময়ের অন্যতম একজন ডিরেক্টর৷ যাকে ৫ আগস্টের পর প্রধান নির্বাহী হিসেবে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন। মোরশেদুল ইসলাম পর্দার পেছনে থেকে গণভবন ও ডিজিএফআইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন। এসব স্থান থেকে পাওয়া এজেন্ডা বাস্তবায়নে জন্য ভাগিনার সঙ্গে কাজ করতেন। তার চলচ্চিত্র পরিচালক পরিচয় ভাঙ্গিয়ে সহজেই গণভবনে প্রভাবশালী হয়ে ওঠেন তিনি। ফ্যাসিস্ট হাসিনার সকল অবৈধ কাজকে বৈধতা দেয়া ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার এজেন্ডা ভিত্তিক আইডিয়া মেকিংয়ের গডফাদার তিনি। নিজের ভাই কামরুল ইসলাম ও বোন জামাই মোক্তাদির চৌধুরীকে মন্ত্রী বানানোর জন্য খুনি হাসিনার সব কাজ হাসিমুখে করে গেছেন তিনি। ফলে পরিবারটি হয়ে ওঠে প্রভাবশালী ও মোরশেদুল ইসলাম হাতিয়ে নেন শত শত কোটি টাকা। ৫ আগস্ট পরবর্তী সকল স্থান থেকে স্বৈরাচারের দোসররা অপসারণ হলেও তাকে করা হয় সময় টিভির সর্বোচ্চ কর্তা ব্যক্তি চেয়ারম্যান। মোরশেদুল ইসলামের নামে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানায় একটি গণহত্যা মামলা থাকলেও গ্রেফতার হননি তিনি। বরং বিভিন্ন চ্যানেল থেকে অপসারিত ফ্যাসিস্টদের দালাল সাংবাদিকদের নতুন করে নিয়োগ দিয়ে বিপ্লব নস্যাতের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত৷
২. আহমেদ জোবায়ের:
আহমেদ জোবায়ের সাবেক খাদ্য ও আইন প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট কামরুল ইসলাম ও সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোক্তাদির চৌধুরীর ভাগিনা। সময় টিভিকে সিআরআইয়ের সাবস্টেশন বানিয়েছিলেন তিনি। রাষ্ট্রবিরোধী সকল নীল নকশা সময় টিভিকে ব্যবহার করেছেন তিনি। পরিবারকে ক্ষমতায় রাখতে গণমানুষের বিপক্ষে দাঁড়িয়ে খুনি হাসিনার সকল কাজের পক্ষে প্রোপাগাণ্ডার নিউজ প্রচার করে গেছে এই গণহত্যার উস্কানিদাতা। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর লোক দেখানোভাবে তাকে এমডির পদ থেকে সরানো হয়। কিন্ত এই আহমেদ জোবায়ের এখনও সময় অন্যতম প্রভাবশালী একজন ডিরেক্টর। মূলত সময় টিভি এখনও তার পূর্ন নিয়ন্ত্রনে রয়েছে। মামা-ভাগিনা মিলে কাজ করে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ পুনর্বাসনে। এখনও এজেন্ডা ভিত্তিক নিউজ ও বিপ্লবকে বিতর্কিত করতে কাজ করছেন তারা। বেছে বেছে আওয়ামী লীগের দলদাস সাংবাদিকদের নিয়োগ নিয়ে প্রেক্ষিতে রচনা করছেন তারা। আহমেদের নিয়ন্ত্রনে চলছে সময় টিভির নিউজ পলিসি ও লোকবল নিয়োগ প্রক্রিয়া। অথচ আহমেদ জোবায়ের নামে ৩টি মামলা রয়েছে। একটি যাত্রাবাড়ী থানায় হত্যা মামলা, আরেকটি গনহত্যা মামলা,শাপলা চত্ত্বরে হেফাজত কর্মীদের উপর চালানো গণহত্যা চালানোর আসামীও সে। সম্প্রতি আহমেদ জোবায়েয়ের অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বাতিল করেছে তথ্য মন্ত্রণালয়। ক'দিন আগে তার ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এখনও গ্রেফতার হয়নি বিদেশে টাকা পাচারকারী হাসিনার অন্যতম দোসর মিডিয়া মাফিয়া আহমেদ জোবায়ের। বরং বিপ্লব নস্যাতের চক্রান্ত করছে।
৩. নিয়াজ মোরশেদ কাদেরী: এডিটোরিয়াল এডভাইজার।
এটি সময় টিভির বার্তা বিভাগের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারনী পদ। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যত্থানের পর এই পদে নিয়োগ দেয়া হয় নিয়াজ মোরশেদ কাদেরীকে। কাদেরী ছাত্রলীগের প্রথম কমিটির সদস্য। রাজনীতি থেকে দূরে থাকলেও কাদেরী তার সাংবাদিকতার জীবনে আওয়ামী লীগের হয়ে মিডিয়া নিয়ন্ত্রণের কলাকুশলী হিসেবে কাজ করে গেছেন পর্দার পেছন থেকে। এই কাদেরী আওয়ামী লীগের গণমাধ্যম পলিসি নির্ধারনের অন্যতম কারিগর। আওয়ামী আমলের সুবিধাভোগী ছায়ানটের সভাপতি সনজিদা খানমের মেয়ের জামাই নিয়াজ মোরশেদ কাদেরী। তারা ফ্যামিলিগতভাবেই স্বৈরাচারের দোসর। নতুন করে সময় টিভিতে নিউজ পলিসিও তিনি ঠিক করছেন এমনভাবে যাতে জুলাই অভ্যুত্থান নস্যাৎ হয়। কাদেরীকে পদে রেখে কোনভাবেই সময় টিভির নিউজ, ও পলিসি অভ্যুত্থানকে ধারন করতে পারবেনা। কেননা কাদেরী ইতোমধ্যে স্বৈরাচারের দালালি করার কারনে বিভিন্ন হাউজ থেকে চাকরিচ্যুত সাংবাদিকদের সময় টিভিতে নিয়োগ দিয়ে দলভারি করছেন, নিয়াজ মোরশেদ কাদেরী এখন বিপ্লব নস্যাতের ষড়যন্ত্রকারীদের সময় টিভিতে লীড দিচ্ছেন। তার সঙ্গে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের নিয়মিত যোগাযোগ হয় তাদের পরামর্শেই তিনি এগুচ্ছেন।
৪. আরিফুল সাজ্জাদ, সদ্য নিয়োগ পাওয়া চিফ আউটপুট এডিটর। আহমেদ জোবায়েরের পরামর্শে মোরশেদুল ইসলাম তাকে নিয়োগ দেন। স্বৈরাচারের দালাল হিসেবে পরিচিত আরিফুল সাজ্জাদ কয়েকটি অফিস থেকে বিতর্কিত নানা ইস্যুতে চাকরিচ্যুত হয়। জুলাই বিল্পবে খুনি হাসিনার পক্ষে অবস্থান নেয়ায়, সর্বশেষ তাকে নিউজ ২৪ থেকেও চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। এখন জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে পাওয়া স্বাধীনতাকে আবারো প্রশ্ন বৃদ্ধ করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত৷ বর্তমান অন্তর্বতী সরকার ও ছাত্র আন্দোলনের স্প্রিরিট প্রশ্নবিদ্ধ করতে মিডিয়া ট্রায়ালের মাধ্যমে চেস্টা করে যাচ্ছে৷ মাঠ থেকে আনা রিপোর্টকে ঘুরিয়ে দিচ্ছেন তিনি। ইতোমধ্যে আওয়ামী পুনর্বাসন প্রকল্পের অধীনে বেশ কিছু নিউজ করেছেন তিনি। ক'দিন আগে ইসকন সন্ত্রাসীদের হাতে আইনজীবী শহীদ সাইফুল ইসলামকে নিয়ে বিভ্রান্তকর নিউজটি তার বড় প্রমাণ। এই সাজ্জাদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের ভালো সম্পর্ক রয়েছে ফলে, সম্প্রতি বাহাউদ্দীন নাসিমের ইন্টারভিউ প্রচার হয় সময় টিভিতে। যেখানে "আওয়ামী লীগ ক্ষমা চায়তে প্রস্তুত ও পুনর্বাসনে করনীয়" শীর্ষক নিউজ প্রচার হয়। যার মাধ্যমে সাজ্জাত আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের প্রেক্ষাপট রচনা করতে মরিয়া।
৫. ওমর ফারুক, চীফ ইনপুট এডিটর। সাবেক এমডি আহমেদ জোবায়েরের সকল পরিকল্পনার দোসর। সিআরআইয়ের তন্ময় ও প্রতীকের সঙ্গে গুজব সেলের হয়ে ভিডিও কন্টেন্ট বানাতেন তিনি। সময় টিভির স্যাটেলাইটে প্রচার না হলেও, শুধুমাত্র ইউটিউবে প্রচারের জন্য ওমর ফারুকের কণ্ঠে শত শত দেশবিরোধী কন্টেন্ট এখনও বিদ্যমান৷ এছাড়া ইস্যু ভিত্তিক নিউজ প্রস্তুত করা, মাঠের নিউজকে ঘুরিয়ে দেয়া, বিরর্কিত হেড লাইন ঠিক করে দেয়াসহ হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখতে এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেছেন তিনি। সময় টিভিতে দেশ-জাতি বিরোধী যত নিউজ প্রচার হয়েছে চীফ আউটপুট এডিটর হিসেবে সব কিছুই হয়েছে ওমর ফারুকের পরামর্শ ও সাহায্যে। ওমর ফারুক ডিফেন্স জার্নালিস্ট অ্যাসোশিয়েশন-(ডিজাব) এর কার্য নির্বাহী কমিটির সদস্য। ডিজিএফআইয়ের সঙ্গে বেশ সখ্যতা থাকায়, যখনই কোন ইস্যুতে হাসিনাকে বাঁচানোর দরকার পড়েছে তখনই নানা প্রোপাগাণ্ডার তথ্য ডিজিএফআইয়ের কাছ থেকে নিয়ে নিউজ আকারে প্রচার করেছে ওমর ফারুক। এবং সেগুলোকে ইংলিশে ভয়েস দিয়ে সিআরআইয়ের এজেন্ডা বাস্তবায়নে বিশ্বব্যাপী ছড়াতে কাজ করেছে। সেই ওমর ফারুক এখনও বহাল তবিয়তে রয়েছে। এখনও নানামুখী চক্রান্ত করছে।
৬. কামাল শাহরিয়ার, ডিজিটাল ইনচার্জ। আওয়ামী লীগের মিডিয়া সেল সিআরআই নিযুক্ত। তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়নে তথ্য সন্ত্রাসের মাধ্যমে গণহত্যাকে সহায়তাকারী । তার মদদে নিউজরুমে সিআরআই এর এজেন্টরা প্রবেশ করত অবাধে এবং প্রতিদিনের এজেন্ডা নির্ধারণ করা হত৷ কামাল শাহরিয়ারকে মূলত সময় টিভিতে জয়েন করায় সাবেক বুয়েটের ছাত্রলীগ নেতা ও সিআরআইয়ের গবেষণা সেলের অন্যতম হোতা তন্ময় ও প্রতীক। শাহরিয়ার নিয়মিত ওদের সঙ্গে যোগাযোগ করতো। কামাল শাহরিয়ার সেই সময় ন্যাশনাল ডেস্কের ইনচার্জ ছিলেন। জয় বাংলা কনসার্টের অন্যতম আয়োজক তিনি। এই কামালই মূলত সময় টিভিতে সিআরআইয়ের সঙ্গে সমন্বয় করতেন। এজন্য তিনি তাদের পক্ষ থেকে বেতনও পেতেন। কামাল শাহরিয়ার সিআর আইয়ের পরামর্শে আমেরিকান স্টেট ডিপার্মেন্টের নিউজ ম্যানুপুলেট করতে দস্তগীর জাহাঙ্গীর নামক একজন আওয়ামী দোসরকে দায়িত্ব দেন। সময় টিভির কাছে দস্তগীর জাহাঙ্গীরের জয়নিং বা অফার লেটার চায়লে দিতে পারবেনা। কারন সে ছিলো সিআরআইয়ের বেতনভুক্ত। বেতন দিতো সিআরআই আর সময় টিভি তার প্রোপাগাণ্ডা প্রচার করতো নিউজ আকারে। এভাবে কামাল শাহরিয়ার দেশে-বিদেশে সিআরআইয়ের হয়ে গণবিরোধী ভূমিকা পালন করেছে। সেই কামাল এখন সময় টিভির হেড অব ডিজিটাল। ফলে টিভিটির অনলাইনে এখনও চলছে বিপ্লব বিরোধী তৎপরতা। বিতর্কিত হেডলাইন, থাম্বনেইল ও ফটোকার্ড বানিয়ে নিয়মিত অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। সি আর আইয়ের সঙ্গে এখনও যোগাযোগ বজায় রেখে তাদের পরামর্শে দেশবিরোধী কর্মকান্ড করে যাচ্ছে। দ্রুত তার গ্রেফতার দাবি করছি।
৭. জনি, জয়েন্ট নিউজ এডিটর (মাঠ থেকে আনা রিপোর্টারদের রিপোর্ট ফ্যাসিস্টদের পক্ষে ঘুরিয়ে দেবার মাস্টারমাইন্ড) এখনো আওয়ামী ফ্যাসিবাদকে ফিরিয়ে আনতে মরিয়া৷ জনি সময় টিভিতে জয়েন করার আগে স্বৈরাচারের আরেক দোসর ডিবিসি নিউজে চাকরি করতো। সেখানকার সম্পাদক একাধিক গণহত্যা মামলার আসামী জায়েদুল আহসান পিন্টুর একান্ত সহচর জনি। পিন্টুর সঙ্গে মিলে তারা দুই টিভিতে দেশবিরোধী নিউজ করেছে। এমন প্রমান রয়েছে প্রচুর। সম্প্রতি ফ্যাসিস্ট পিন্টুকে ডিবিসি নিউজ থেকে অপসারণ করা হলে, তাকে ফেরানোর দাবিতে ডিবিসি নিউজের সামনে মানবন্ধনের অন্যতম আয়োজক সময় টিভির জনি। চাকরিচ্যুত ফ্যাসিস্ট পিন্টুর পক্ষে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করে চাকরি হারিয়েছে বেশ কয়েকজন কর্মী। তাদেরকে সময় টিভিতে পুনর্বাসনের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে জনি। তারই অংশ হিসেবে ফ্যাসিস্ট পিন্টুর আরেক সহযোগী নাদিম মাহমুদকে সময় টিভিতে নিউজ এডিটর পদে জয়েন করিয়েছে জনি। এভাবে জনি আওয়ামী এজেন্ডা বাস্তবায়নকল্পে বিভিন্ন চ্যানেল থেকে পতিত সাংবাদিকদের সময় টিভিতে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করছে।
৮. বুলবুল রেজা, ডিবি হারুনের মদদপুষ্ট সকল মিথ্যা এবং সাজানো ঘটনার রিপোর্ট তৈরি করত৷ এছাড়া ডিবি হারুন ও পুলিশের কাছ থেকে ভুয়া অডিও ফাঁসের রিপোর্ট তৈরি করত৷ সর্বশেষ বিএনপি ও জামায়াতের সকল আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে উদ্দেশ্যমূলোক প্রতিবেদনের মাস্টারমাইন্ড৷ ছাত্র আন্দোলনকে সন্ত্রাস ও দুর্বৃত্তদের কর্মকাণ্ড বলে প্রচারকারী প্রথম সাংবাদিক বুলবুল রেজা। ডিবি হারুনের সঙ্গে মিলে দেশ বিরোধী হাজারও প্রোপাগাণ্ডার জনক বুলবুল রেজা। ভূয়া ফোন কল ফাঁসের নাটক করে গণ অভ্যুত্থানকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করেছে। যখনই কোন দেশপ্রেমিকের চরিত্র হনন দরকার হয়েছে ডিবি হারুন তখনই বেছে নিয়েছেন বুলবুল রেজাকে। দুজন মিলে বানিয়েছেন মিথ্যা বানোয়াট সব নিউজ। ফলে অল্পদিনেই বিপুল অর্থের মালিক বনে গেছেন বুলবুল রেজা। ৫ আগস্ট অভ্যুত্থানের পর ঢাকা ছেড়ে পালিয়ে যায় বুলবুল রেজা। আত্মগোপনে ছিলো ৩ মাস। স্বৈরাচারের এই দোসরকে ক'দিন আগে আবার ফিরিয়ে এনেছে কর্তৃপক্ষ। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন কে নস্যাৎ করতে তার বহু নিউজ আছে, যা এখনও ইউটিউবে রয়ে গেছে।
৯. দেবাশীষ কুমার রায়, অ্যাসোসিয়েট স্পেশাল করসপন্ডেন্ট। সময়ে শেখ হাসিনার সকল নিউজ কাভার করতেন। এজেন্ডা ভিত্তিক নিউজের মাস্টারমাইন্ড। হাসিনার সব অপ-কর্ম ঢাকতে নিউজে মিথ্যা প্রচারনা চালিয়ে বৈধতা দিয়ে গেছে। গনভবন প্রেস উইংয়ের আশরাফুল আলম খোকনের সঙ্গে খুবই হৃদ্যতা থাকায়, নিজের বউকে বানিয়েছেন জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। ফ্যাসিবাদের দালালীর পুরস্কার হিসেবে ব্যক্তিগত নানা সুবিধা গ্রহন করেছেন। সে সময় তিনি পিএম অফিসের প্রশাসনিক উইংস ব্যবহার করে, বিরোধীমতের সবাইকে নানাভাবে হেনস্তা করেছেন। অসংখ্য রিপোর্টারদের পিএম অফিসে ঢুকতে সরকারীভাবে বাধা দিয়েছে। সেই দেবাশীষকে প্রোমশন দিয়ে বসানো হয়েছে সেন্ট্রাল ডেস্কে। কাজ করছেন নিউজ এডিটর হিসেবে। ফলে মাঠের নিউজকে টুইস্ট করে এখনও এজেন্ডা ভিত্তিক খেলে যাচ্ছেন ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা-র এর ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত দেবাশীষ কুমার রায়।
১০. কমল দেঃ চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান৷ বিরোধী মত দমনে হাজার হাজার ভুয়া এবং অতিরঞ্জিত রিপোর্টের কারিগর৷ পুলিশের হাজারো মিথ্যা রিপোর্টের প্রতিবেদক৷ জুলাই গণহত্যার চট্টগ্রামের এজহারভুক্ত আসামী। সম্প্রতি তার ব্যাঙ্ক হিসাব জব্দের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সন্ত্রাসী সংগঠন ইসকনের অন্যতম সহযোগী কমল দে এখনও বহাল তবিয়তে আছে। জুলাই বিপ্লবকে ব্যার্থ করতে ষড়যন্ত্র করছে।
১১. সালাহ উদ্দীন সেলিম: প্রযুক্তি বিভাগ প্রধান। সেলিম সিআরআই এর কন্টেন্ট মেকার। সিআর আইয়ের ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে কারিগরি দিকটিও দেখভাল করতেন তিনি। সময় টিভিতে সি আর আইয়ের সকল প্রডাকশন মূলত সালাহ উদ্দীন সেলিম নির্মান করতেন। সিআরআইয়ের জয় বাংলা কনসার্ট ও ইয়াং স্টার প্রোগ্রামের অন্যতম ডিজাইনার সে। সালাহ উদ্দীন সেলিম এই দুই প্রোগ্রামের মিডিয়া পার্টনার করেছিলেন সময় টিভিকে। এছাড়া এসব অনুষ্ঠান সময় টিভিতে সরাসরি সম্প্রচার করারও দায়িত্বে ছিলেন। জুলাই গণহত্যার তিন মামলার আসামী সময় টিভির সাবেক এমডি আহমেদ জোবায়ের ডিজিটাল প্ল্যাটফরমের সকল অবৈধ আয় সেলিমের একাউন্টে জমা হতো। সেলিমের মাধ্যমে সময় টিভির আইটি বিভাগ নিয়ন্ত্রণ করে আহমেদ জোবায়ের এখনও টাকা ইনকাম করছেন। এছাড়া সালাহ উদ্দীন সেলিম, সি আর আই থেকে এসব কাজের বিনিময়ে বহু সুযোগ সুবিধা নিয়েছেন। বর্তমানেও সি আর আইয়ের সঙ্গে তার নিয়মিত যোগাযোগ হয়।
১২. রাফিউল ইসলামঃ এক্সিকিউটিভ প্রডিউসার নিউজ বিভাগ। রাফিউল ইসলাম রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ নেতা। সময় টিভির বার্তা বিভাগের এক্সিকিউটিভ প্রডিউসার হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে আওয়ামী মিডিয়া সেলের সঙ্গে সুসম্পর্ক হয়। দেশবিরোধী বিভিন্ন মিথ্যা গুজবের থিম মেকার সে, এমন কি ভিডিও কন্টেন্ট প্রডিউস করতেন তিনি। সি আর আইয়ের সময় টিভিতে যে কয়জন বিশ্বস্ত ছিলো, রাফি তাদের অন্যতম। রাফির মাধ্যমে সময় টিভিতে সি আর আই বিভিন্ন প্রোগ্রাম প্রোডিউস করেছে। গুজব সেল সি আর আইয়ের ইয়াং স্টার ও জয় বাংলা কনসার্টের অন্যতম কলাকুশলী রাফিউল ইসলাম। এসব প্রোগ্রাম সময় টিভিতে প্রচারের জন্য প্রোডিউসার হিসেবে কাজ করতেন রাফিউল ইসলাম।
১৩. মাহমুদ মোক্তারঃ সহযোগী ব্যবস্থাপক, ডিজিটাল বিভাগ। সময় টিভির ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে ব্যবহার করে আওয়ামী এজেন্ডা বাস্তবায়নের মাস্টারমাইন্ড। যখন যাকে বিতর্কিত করার দরকার তখন তার বিরুদ্ধে মিথ্যা নিউজ লিখে দিতেন এই মোক্তার। যেসব নিউজ টিভিতে প্রচার করা যেতো না, সে সব গুজব ডিজিটালে ছাপিয়ে দিতো সে। এই মোক্তারও ছিলো সি আর আই সময় টিমের অন্যতম সদস্য। ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে সব ধরনের প্রোপাগাণ্ডা তিনি প্রচার করতেন।
Tags:
জাতীয়